ঈমানদারগণ পরষ্পর ভাই-ভাইतहरीर: মুহাদ্দিসুল আসর হাফেজ যুবায়ের আলী জায়ি রহমাতুল্লাহ আলাইহি |
◾আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ اِنَّمَا الۡمُؤۡمِنُوۡنَ اِخۡوَۃٌ فَاَصۡلِحُوۡا بَیۡنَ اَخَوَیۡکُمۡ وَ اتَّقُوا اللّٰہَ لَعَلَّکُمۡ تُرۡحَمُوۡنَ ﴿٪۱۰﴾ یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا یَسۡخَرۡ قَوۡمٌ مِّنۡ قَوۡمٍ عَسٰۤی اَنۡ یَّکُوۡنُوۡا خَیۡرًا مِّنۡہُمۡ وَ لَا نِسَآءٌ مِّنۡ نِّسَآءٍ عَسٰۤی اَنۡ یَّکُنَّ خَیۡرًا مِّنۡہُنَّ ۚ وَ لَا تَلۡمِزُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ وَ لَا تَنَابَزُوۡا بِالۡاَلۡقَابِ ؕ بِئۡسَ الِاسۡمُ الۡفُسُوۡقُ بَعۡدَ الۡاِیۡمَانِ ۚ وَ مَنۡ لَّمۡ یَتُبۡ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۱۱﴾ یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اجۡتَنِبُوۡا کَثِیۡرًا مِّنَ الظَّنِّ ۫ اِنَّ بَعۡضَ الظَّنِّ اِثۡمٌ وَّ لَا تَجَسَّسُوۡا وَ لَا یَغۡتَبۡ بَّعۡضُکُمۡ بَعۡضًا ؕ اَیُحِبُّ اَحَدُکُمۡ اَنۡ یَّاۡکُلَ لَحۡمَ اَخِیۡہِ مَیۡتًا فَکَرِہۡتُمُوۡہُ ؕ وَ اتَّقُوا اللّٰہَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ تَوَّابٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۲﴾ یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ اِنَّا خَلَقۡنٰکُمۡ مِّنۡ ذَکَرٍ وَّ اُنۡثٰی وَ جَعَلۡنٰکُمۡ شُعُوۡبًا وَّ قَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوۡا ؕ اِنَّ اَکۡرَمَکُمۡ عِنۡدَ اللّٰہِ اَتۡقٰکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَلِیۡمٌ خَبِیۡرٌ ﴿۱۳﴾ [অনুবাদ-তাফসির আবু বকর জাকারিয়া] ❝মুমিনগণ তো পরস্পর ভাই ভাই ; কাজেই তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে আপোষ মীমাংসা করে দাও। আর আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও। হে ঈমানদারগণ ! কোন মুমিন সম্প্রদায় যেন অপর কোন মুমিন সম্প্রদায়কে উপহাস না করে; কেননা যাদেরকে উপহাস করা হচ্ছে তারা উপহাসকারীদের চেয়ে উত্তম হতে পারে এবং নারীরা যেন অন্য নারীদেরকে উপহাস না করে; কেননা যাদেরকে উপহাস করা হচ্ছে তারা উপহাসকারিণীদের চেয়ে উত্তম হতে পারে। আর তোমরা একে অন্যের প্ৰতি দোষারোপ করো না এবং তোমরা একে অন্যকে মন্দ নামে ডেকো না ; ঈমানের পর মন্দ নাম অতি নিকৃষ্ট। আর যারা তওবা করে না তারাই তো যালিম।হে ঈমানদারগণ ! তোমরা অধিকাংশ অনুমান হতে দূরে থাক ; কারণ কোন কোন অনুমান পাপ এবং তোমরা একে অন্যের গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না এবং একে অন্যের গীবত করো না । তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে চাইবে ? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণ্যই মনে কর। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর; নিশ্চয় আল্লাহ্ তওবা গ্রহণকারী, পরম দয়ালু।হে মানুষ! আমরা তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে , আর তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমারা একে অন্যের সাথে পরিচিত হতে পার । তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সে ব্যাক্তিই বেশী মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে বেশী তাকওয়াসম্পন্ন। নিশ্চয় আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত।❞ [সুরা হুজরাত ,সুরা নং ৪৯ , আয়াত ১৩] ◾রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ، لاَ يَظْلِمُهُ وَلاَ يُسْلِمُهُ، وَمَنْ كَانَ فِي حَاجَةِ أَخِيهِ كَانَ اللَّهُ فِي حَاجَتِهِ، وَمَنْ فَرَّجَ عَنْ مُسْلِمٍ كُرْبَةً فَرَّجَ اللَّهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِنْ كُرُبَاتِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ، وَمَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ". [অনুবাদ-তাও.পাব.] ❝মুসলমান মুসলমানের ভাই। সে তার উপর যুল্ম করবে না এবং তাকে যালিমের হাতে সোপর্দ করবে না। যে কেউ তার ভাইয়ের অভাব পূরণ করবে, আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের দিন তার বিপদসমূহ দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দোষ ঢেকে রাখবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ ঢেকে রাখবেন।❞ [বুখারী, হাদিস নং ২৪৪২ ; মুসলিম ,হা/২৫৮০] ◾রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন " لاَ تَبَاغَضُوا، وَلاَ تَحَاسَدُوا، وَلاَ تَدَابَرُوا، وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا، وَلاَ يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلاَثِ لَيَالٍ ". [অনুবাদ-তাও.পাব.] ❝ তোমরা পরস্পর বিদ্বেষ ভাবাপন্ন হয়ো না, হিংসা করো না এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন থেকো না। আর তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ও পরস্পর ভাই-ভাই হয়ে যাও। কোন মুসলিমের জন্য বৈধ নয় যে, সে তার ভাই থেকে তিন দিনের অধিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে থাকবে।❞ [মুয়াত্তা ইমম মালিক রেওয়াত ইবনূ কাসিম বিত তাওকীক-৪ ; সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬০৭৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৪৫৯] ◾রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ " تَرَى الْمُؤْمِنِينَ فِي تَرَاحُمِهِمْ وَتَوَادِّهِمْ وَتَعَاطُفِهِمْ كَمَثَلِ الْجَسَدِ إِذَا اشْتَكَى عُضْوًا تَدَاعَى لَهُ سَائِرُ جَسَدِهِ بِالسَّهَرِ وَالْحُمَّى ". [অনুবাদ-তাও.পাব.] ❝পারস্পরিক দয়া, ভালবাসা ও সহানুভূতি প্রদর্শনে তুমি মু'মিনদের একটি দেহের মত দেখবে। যখন শরীরের একটি অঙ্গ রোগে আক্রান্ত হয়, তখন শরীরের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রাত জাগে এবং জ্বরে অংশ নেয়।❞ [মুসলিম ৪৫/১৭, হাঃ ২৫৮৬, সহীহ বুখারীর হাদিস নং ৬০১১ এর শব্দে ] এটি সহীহ হাদীসে এসেছে যে রাসুলুল্লাহ ﷺ- বলেছেনঃ يَا أَيُّهَا النَّاسُ، أَلَا إِنَّ رَبَّكُمْ وَاحِدٌ، وَإِنَّ أَبَاكُمْ وَاحِدٌ، أَلَا لَا فَضْلَ لِعَرَبِيٍّ عَلَى عَجَمِيٍّ ، وَلَا لِعَجَمِيٍّ عَلَى عَرَبِيٍّ، وَلَا أَحْمَرَ عَلَى أَسْوَدَ، وَلَا أَسْوَدَ عَلَى أَحْمَرَ، إِلَّا بِالتَّقْوَى أَبَلَّغْتُ হে লোকেরা! শুনে নাও তোমাদের রব একজন এবং তোমাদের বাবা একজন (অর্থাৎ ,দুইজন কখনো বাবা হতে পারে না) ,শুনে রাখো! কোন আরবীকে(আরব) কোন আজমীর ওপর, কোন আজমীকে(অন-আরব) কোন আরবীর ওপর ,ফর্সাকে(মানুষকে) কালোর (মানুষের) উপর এবং কালোকে ফর্সার উপর কোনো প্রাধান্য দেয়া যাবে না কেবল (মানদন্ড হবে) তাকওয়া ।আমি কি তোমাদের কাছে পৌঁছে (আল্লাহর দীন) দিতে পেরেছি?লোকেরা বললো- بَلَّغَ رَسُولُ اللهِ ,-রাসুলুল্লাহ ﷺ পৌঁছে দিয়েছেন। অতঃপর রাসুলুল্লাহ ﷺ জিজ্ঞেস করলেন- أَيُّ يَوْمٍ هَذَا؟ -আজকে কোন দিন?লোকেরা বললেন-يَوْمٌ حَرَامٌ- হারাম দিন (সমূহের একটি)। রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর আবার বলতে শুরু করলেন - অতঃপর রাসুলুল্লাহ ﷺ- প্রশ্ন করলেন-أَيُّ شَهْرٍ هَذَا؟ -এটি কোন মাস? উপস্থিত লোকেরা উত্তরে বললো -شَهْرٌ حَرَامٌ- হারাম মাস (সমূহের একটি)। পুনরায় রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর প্রশ্ন- أَيُّ بَلَدٍ هَذَا؟- এটি কোন দেশ?লোকেরা বললো- بَلَدٌ حَرَامٌ- হারাম দেশ (মক্কা) ।অতঃপর রাসুলুল্লাহ ﷺ-বললেন: فَإِنَّ اللهَ قَدْ حَرَّمَ بَيْنَكُمْ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ,كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا، فِي شَهْرِكُمْ هَذَا، فِي بَلَدِكُمْ هَذَا أَبَلَّغْتُ নিঃসন্দেহে আল্লাহ তোমাদের উপর পরষ্পরের রক্ত এবং মাল হারাম করেছেন ।( অতঃপর পুনরায় ﷺ বললেন )এই মাসের আজকের দিনের তারিখে ,এই শহরে ,আমি কি পৌঁছে দিয়েছি? লোকেরা বললো- بَلَّغَ رَسُولُ اللهِ-(জী) আল্লাহর রাসূল ﷺ .আপনি পৌঁছে দিয়েছেন। অতঃপর রাসুলুল্লাহ ﷺ-বললেন-" لِيُبَلِّغِ الشَّاهِدُ الْغَائِبَ- অনুপস্থিতদের কাছে (এই কথা গুলো) পৌঁছে দাও। (মুসনাদে আহমাদ,৫/৪১১ , হাদিস ২৩৪৮৯ ,সনদ সহীহ) তাহলে এটি জানা গেলো যে দীনে ইসলামে আরবি-আজমি,কালো-সাদা, পাঠান-পান্জবী ,সিন্দী-বালুচাঈ, পাকিস্তানী-হিন্দুস্তানী আর দেশি-বিদেশিদের কোনো মধ্যে পার্থক্য নেই বরং সব আহলে ঈমান(ঈমানের ধারক/ঈমানদার) ভাই-ভাই। কিন্তু ধ্বংস হয়েছে ঐসব লোকের কারণে যারা মুসলিমদের দলে-দলে এবং খন্ড-বিখন্ড করতে চায়। ------------ तहरीर: মুহাদ্দিসুল আসর হাফেজ যুবায়ের আলী জায়ি রহমাতুল্লাহ আলাইহি অনুবাদ- কামরুল হাসান বিন হোসেন রোমানাইজ- সায়েদ ইব্রাহীম সালাফি রেফারেন্স-[Mahnama Al-Hadees, Shumara no.47, Safa no.2-3] |
অন্যান্য নিবন্ধ:
1 | হানাফী নামাজ! নাকি আল্লাহর রাসূলের মুহাম্মাদী সালাত? মুহাদ্দিসুল আসর হাফেজ যুবায়ের আলী জায়ি রহমাতুল্লাহ আলাইহি |
2 | লেনদেনে কমিশন নেয়া মুহাদ্দিসুল আসর হাফেজ যুবায়ের আলী জায়ি রহমাতুল্লাহ আলাইহি |
3 | خلق آدم علی صورتہ অর্থ মুহাদ্দিসুল আসর হাফেজ যুবায়ের আলী জায়ি রহমাতুল্লাহ আলাইহি |
4 | ঈমানদারগণ পরষ্পর ভাই-ভাই মুহাদ্দিসুল আসর হাফেজ যুবায়ের আলী জায়ি রহমাতুল্লাহ আলাইহি |
5 | মুজাদ্দিদ কে? মুহাদ্দিসুল আসর হাফেজ যুবায়ের আলী জায়ি রহমাতুল্লাহ আলাইহি |
6 | মুহাদ্দিসুল আসার শায়েখ যুবাইর আলী যাঈ রহিমাহুল্লাহ- সমসাময়িক ওলামদের দৃষ্টিতে |
7 | তাওহীদ- সবার আগে! মুহাদ্দিসুল আসর হাফেজ যুবায়ের আলী জায়ি রহমাতুল্লাহ আলাইহি |
Android App --or-- iPhone/iPad App
IshaatulHadith Hazro © 2024